………………………………সোহাইল আহমেদ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-তে আওয়ামী লীগপন্থী ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করে গঠিত উপজেলা কমিটির বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ করেছে উপজেলা ছাত্রদল ও অঙ্গ সংগঠন।
আজ বুধবার (৫ জুন) বিকেল সাড়ে ৩ টায় উপজেলা চত্বরে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিলে বক্তারা ক্ষোভের সঙ্গে বলেন,“আমরা ২০২৪ সালের কোনো আন্দোলনে এদের কাউকে দেখিনি। রাজপথে গুলির মধ্যে আমরা যখন বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়েছি, তখন তারা কোথায় ছিল? আন্দোলনের ধারে-কাছেও না থাকা এই মুখচেনা সুবিধাবাদীদের হঠাৎ করে নেতৃত্বে বসানো মানে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা। এরা ‘রাজনৈতিক দালাল’, ‘ক্ষমতার ভিখারি’। আমরা এই প্রহসনের কমিটি মেনে নেব না।”
বক্তারা সরাসরি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “যাদের রাজপথের লড়াইয়ে ইতিহাস নেই, তাদের নেতৃত্ব দেওয়াটা আন্দোলনের চেতনার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা। যদি অবিলম্বে এই কমিটি বাতিল না করা হয়, তাহলে বাঞ্ছারামপুর ছাত্রদল ও অঙ্গ সংগঠন রাজপথ দখলে নেবে। প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে — যার পরিণতি ভয়াবহ হবে। আমরা কাউকে ছাড় দেব না।”
বক্তারা আরও বলেন, “যারা আওয়ামী লীগে সুবিধা নিতে ব্যর্থ হয়ে এখন এনসিপির ছায়ায় আবার রাজনীতিতে ফেরার চেষ্টা করছে, তাদের স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছি — বাঞ্ছারামপুরের মাটি বিএনপি-ছাত্রদলের ঘাঁটি। এখানে আওয়ামী মুখোশধারীদের কোনো ঠাঁই হবে না।”
বক্তারা জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের উদ্দেশে বলেন, “আপনারা যদি ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে ঘরে বসে সুবিধা নেওয়া লোকদের দিয়ে কমিটি দেন, তাহলে এই দল জনগণের আস্থা হারাবে। আমরা দেশপ্রেমিক তরুণ সমাজের প্রতিনিধি হিসেবে সেই বিশ্বাসভঙ্গ হতে দেব না।”
উল্লেখ্য, গত ৪ জুন এনসিপির পক্ষ থেকে বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় ২১ সদস্যবিশিষ্ট সমন্বয় কমিটি গঠন করা হয়, যার প্রধান সমন্বয়কারী করা হয় মোহাম্মদ মাইনউদ্দিনকে। তবে ছাত্রদলের অভিযোগ, এই কমিটিতে আন্দোলন-অভিজ্ঞ, ত্যাগী বা জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য কোনো মুখ নেই। বরং তাতে স্থান পেয়েছে সুবিধাবাদী, রাজনৈতিক হাইব্রিড ও অনুপ্রবেশকারী ব্যক্তিরা।
বক্তারা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলেন, ছাত্রদল ও তার অঙ্গ সংগঠনের পক্ষ থেকে গঠিত এই এনসিপি কমিটিকে বাঞ্ছারামপুরের মাটিতে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হলো। এদের কোনো কার্যক্রম বরদাশত করা হবে না।
এতে উপস্থিত ছিলেন, পৌর ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক মো: ইব্রাহিম সরকার, বাঞ্ছারামপুর পৌর ছাত্রদলের সাবেক সদস্য সচিব ও বাঞ্ছারামপুর সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মনিরুল হাসান আব্দুল্লাহ, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক শাহ আজিজ শাওন, বাঞ্ছারামপুর সরকারি কলেজের ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সিফাত আহমেদ, পৌর ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক জাহিদুল ইসলাম ফাহাদ, রুপসদী ইউপির ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক একরাম হায়দার, ছাত্রদল নেতা ফয়সাল, সবুজ, মো: জামির, মো: শোভ, হৃদয় কুমার, পাপন, নোমান, সুজন, নিমন, নাকিব, আবু বকর সিদ্দিক, মো: মাসুদ, আব্দুর রহমান, পারভেজ, সাইদুলসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ।